প্রকাশিত: Thu, Feb 16, 2023 6:00 PM
আপডেট: Tue, Jun 24, 2025 1:48 PM

বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন

বেয়াইর আমন্ত্রণে কন্যা ও জামাতাকে দেখতে এবার বৈধভাবে বাংলাদেশে এলেন অনুপ চেটিয়া

মাছুম বিল্লাহ: ভারত সরকারের কাছে হস্তান্তরের ৮ বছর পর বৈধভাবে বাংলাদেশে এলেন উত্তর-পূর্ব ভারতের বিদ্রোহী সংগঠন ইউনাটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসামের (উলফা) সাধারণ সম্পাদক অনুপ চেটিয়া ওরফে গোলাপ বড়ুয়া। গত ৯ ফেব্রুয়ারি তিনি আখাউড়া স্থল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। এর ৪ দিন পর, ১২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার হযরত শাহজালাল (রহ.) বিমানবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন। 

উত্তর-পূর্ব ভারতের এই আলোচিত নেতা অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে দীর্ঘ ২৮ বছর বাংলাদেশে ছিলেন। এরমধ্যে ১৮ বছর ছিলেন কারাগারে। ২০১৫ সালে কাশিমপুর কারাগার থেকে তাকে ভারতের কাছে হস্তন্তর করে সরকার। দেশে ফিরে তিনি আসামের স্বাধীনতার দাবিতে সশস্ত্র সংগ্রামের পথ থেকে সরে  ভারত সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় যোগদান করনে। বর্তমানে তিনি উলফার আলোচনাপন্থী দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। 

কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করে বাংলাদেশ সফর করেছেন অনুপ চেটিয়া। সফরের সময় টঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধাও নিবেদন করেছেন। 

গত ১২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা ছাড়ার আগে অনুপ চেটিয়া আমাদের নতুন সময়কে জানান, মেয়ে বন্যা বড়ুয়ার শ্বশুরবাড়ির আমন্ত্রণে তিনি ঢাকায় এসেছিলেন। ধানমন্ডিতে মেয়ের শ^শুড়ের বাড়িতেই তিনি উঠেছিলেন। গত নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে মেয়ে বন্যা বড়ুয়ার সঙ্গে কুমিল্লার ছেলে অনির্বান চৌধুরীরর বিয়ে হয়। মেয়ে ও জামাই এখন ঢাকায়। তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেই তার এই আগমন। 

তবে এই সফর নিয়ে এতো গোপনীয়তা কেনো? এমন প্রশ্নের উত্তেরে তিনি জানান, দীর্ঘ ২৮ বছর বাংলাদেশে ছিলাম। এরমধ্যে ১৮ বছরই জেলে। বাংলাদেশের সবাই আমাকে একজন সশস্ত্র সংগ্রামী হিসেবে চেনে। মিডিয়ায় তার খবর গুরুত্ব সহকারে প্রকাশিত হয়। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর যদি মেয়ের শশুড়বাড়ির লোকজন বিব্রত হয় সে কারণে তিনি এ সফরের বিষয় গোপন রেখেছেন।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে রাজনীতিক নেতা, মন্ত্রীসহ অনেকই আমার পরিচিত পরিচিত। এখানে আমার সমাজকর্মী, বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী ও সাংবাদিকসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রয়েছে। কিন্তু সীমাবদ্ধতার কারণে তাদের সঙ্গে সাক্ষাত করতে পারিনি। 

উলফার প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক অনুপ চেটিয়াকে ১৯৯৭ সালের ২১ ডিসেম্বর ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর তার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থান এবং অবৈধভাবে বিদেশি মুদ্রা ও একটি স্যাটেলাইট ফোন রাখার অভিযোগে তিনটি মামলা হয়। আদালত তিনটি মামলায় তাকে যথাক্রমে তিন, চার ও সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। একসঙ্গে তিন মামলার সাজা কার্যকর হওয়ায় সাত বছর পরই ২০০৪ সালে তার সাজার মেয়াদ শেষ হয়। কিন্তু তারপর থেকে তিনি কারাগারে আটক ছিলেন। ২০১৫ সালে তাকে ভারতের কাছে হস্তন্তর করা হয়। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব